বায়ো গ্যাস
প্রকল্প প্রস্তুত
প্রনালী
বায়োগ্যাস প্রকল্প
যুগ-যুগ ধরে বাংলাদেশের গ্রামঞ্চলে রান্নাবান্নার কাজে কাঠ, খড়-কুটা, নাড়া, শুকনা গোবর এগুলোই জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্তমানে প্রতিবছর দেশে ৩ কোটি ৯০ লাখ মেট্রিক টন এ জাতীয় জ্বালানির প্রয়োজন। জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহারের ফলে গাছপালা উজাড় হয়ে যাচ্ছে, যার ফলে আমরা শুধু বনজ সম্পদই হারাচ্ছি না, আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশকে ঠেলে দিচ্ছি এক ভয়াবহ অবস্থার দিকে। অন্যদিকে গোবর, নাড়া এবং অন্যান্য পচনশীল পদার্থগুলো পুড়িয়ে ফেলার ফলে আবাদি জমি জৈব সার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে জ্বালানি সঙ্কট তীব্রতর হচ্ছে। এই জ্বালানি সঙ্কট মোকাবেলায় বিকল্প জ্বালানি হিসেবে বায়োগ্যাসই একমাত্র এই সমস্যার সমাধান দিতে পারে এবং নিশ্চিত করতে পারে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ উন্নতমানের জৈব সার, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও উন্নত জীবনযাত্রা।
বায়োগ্যাস কী ?
গোবর ও অন্যান্য পচনশীল পর্দাথ বাতাসের অনুপস্থিতিতে পচানোর ফলে যে বড়বিহীন জ্বালানি গ্যাস তৈরী হয় তাই হচ্ছে বায়োগ্যাস। এতে ৬০/৭০ ভাগ জ্বালানি গ্যাস তৈরী হয়ে অবশিষ্ট অংশ উন্নতমানের জৈবসার হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে। জ্বলানি গবেষকরা, বলছেন, মানব বিষ্ঠা, মোরগ-মুরগীর বিষ্ঠা, জৈব আবর্জনা এবং গোবর থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন সম্ভব। পৃথিবীর অনেক দেশেই এ জাতীয় পর্দাথ থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন করে কলকারখানা এবং গৃহস্থালী কাজে ব্যবহার হচ্ছে। বায়োগ্যাস ব্যবহার এবং উৎপাদনে গণচীন সবচেয়ে এগিয়ে আছ। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও বায়োগ্যাসের প্রচলন রয়েছে। গৃহস্থালী রান্নাবান্না এবং ম্যান্ডেলবাতি জ্বালানো ছাড়াও বায়োগ্যাস দিয়ে জেনারেটরের সাহায্যে বিদু্যৎ উৎপাদন করে বাতি, ফ্যান, ফ্রিজ, টিভিসহ অন্যান্য বৈদুত্যিক সরঞ্জামাদি চালানো সম্ভব। গবেষকরা বলছেন, ৭-৮ সদস্য বিশিষ্ট পরিবারের জন্য ৫-৬ টি মাঝারি আকারের গরুর দৈনন্দিন গোবর থেকে ১০৫ ঘনফুট গ্রাস উৎপাদন সম্ভব যা দিয়ে তিন বেলার রান্না-বান্না সহ একটি ম্যান্টেল বাতি জ্বালানো যাবে।
জ্বালানি সংকট সমাধানে এই মাধ্যমটিতে এত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এর প্রসার ঘটেনি এ দেশের এতটুকুও। বাংলাদশে বিজ্ঞান ও গবেষণা পরিষদের জ্বালানি গবেষণা ও গোড়ার ইনস্টিটিউট এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে অনেক বছর ধরে।
যুগ-যুগ ধরে বাংলাদেশের গ্রামঞ্চলে রান্নাবান্নার কাজে কাঠ, খড়-কুটা, নাড়া, শুকনা গোবর এগুলোই জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্তমানে প্রতিবছর দেশে ৩ কোটি ৯০ লাখ মেট্রিক টন এ জাতীয় জ্বালানির প্রয়োজন। জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহারের ফলে গাছপালা উজাড় হয়ে যাচ্ছে, যার ফলে আমরা শুধু বনজ সম্পদই হারাচ্ছি না, আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশকে ঠেলে দিচ্ছি এক ভয়াবহ অবস্থার দিকে। অন্যদিকে গোবর, নাড়া এবং অন্যান্য পচনশীল পদার্থগুলো পুড়িয়ে ফেলার ফলে আবাদি জমি জৈব সার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে জ্বালানি সঙ্কট তীব্রতর হচ্ছে। এই জ্বালানি সঙ্কট মোকাবেলায় বিকল্প জ্বালানি হিসেবে বায়োগ্যাসই একমাত্র এই সমস্যার সমাধান দিতে পারে এবং নিশ্চিত করতে পারে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ উন্নতমানের জৈব সার, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও উন্নত জীবনযাত্রা।
বায়োগ্যাস কী ?
গোবর ও অন্যান্য পচনশীল পর্দাথ বাতাসের অনুপস্থিতিতে পচানোর ফলে যে বড়বিহীন জ্বালানি গ্যাস তৈরী হয় তাই হচ্ছে বায়োগ্যাস। এতে ৬০/৭০ ভাগ জ্বালানি গ্যাস তৈরী হয়ে অবশিষ্ট অংশ উন্নতমানের জৈবসার হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে। জ্বলানি গবেষকরা, বলছেন, মানব বিষ্ঠা, মোরগ-মুরগীর বিষ্ঠা, জৈব আবর্জনা এবং গোবর থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন সম্ভব। পৃথিবীর অনেক দেশেই এ জাতীয় পর্দাথ থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন করে কলকারখানা এবং গৃহস্থালী কাজে ব্যবহার হচ্ছে। বায়োগ্যাস ব্যবহার এবং উৎপাদনে গণচীন সবচেয়ে এগিয়ে আছ। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও বায়োগ্যাসের প্রচলন রয়েছে। গৃহস্থালী রান্নাবান্না এবং ম্যান্ডেলবাতি জ্বালানো ছাড়াও বায়োগ্যাস দিয়ে জেনারেটরের সাহায্যে বিদু্যৎ উৎপাদন করে বাতি, ফ্যান, ফ্রিজ, টিভিসহ অন্যান্য বৈদুত্যিক সরঞ্জামাদি চালানো সম্ভব। গবেষকরা বলছেন, ৭-৮ সদস্য বিশিষ্ট পরিবারের জন্য ৫-৬ টি মাঝারি আকারের গরুর দৈনন্দিন গোবর থেকে ১০৫ ঘনফুট গ্রাস উৎপাদন সম্ভব যা দিয়ে তিন বেলার রান্না-বান্না সহ একটি ম্যান্টেল বাতি জ্বালানো যাবে।
জ্বালানি সংকট সমাধানে এই মাধ্যমটিতে এত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এর প্রসার ঘটেনি এ দেশের এতটুকুও। বাংলাদশে বিজ্ঞান ও গবেষণা পরিষদের জ্বালানি গবেষণা ও গোড়ার ইনস্টিটিউট এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে অনেক বছর ধরে।
কিভাবে বায়োগ্যাম
প্লান্ট তৈরী করবো, এর কারিগরী তথ্য
কোথায় পাব, এর নির্মাণ
ব্যয় কত হবে
ইত্যাদি।
৭/৮ সদস্যবিশিষ্ট পরিবারের জন্য ১০৫ (৩ ঘনমিটার) ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনক্ষম স্থিরডোম বায়েঅগ্যাস প্লান্ট নির্মাণ পদ্ধতি
ডাইজেস্টার তৈরি পদ্বতি
২৫০ সে. মি. ব্যাস এবং ২২০ সে. মি. গভীর একটি গোলাকার কুয়া খননকরতে হবে। কুয়ার তলদেশ চাড়ির তলার আকৃতিতে খনন হবে যাতে হেব যাতে বাড়ির তলার মধ্যবিন্দু থেকে আর্চের উচ্চতা ৩০ সে. মি. (১ ফুট) হয় এর পর তলদেশে ভালো করে দুরমুজ করে নিতে হবে।
তলদেশে ৭.৫ সে. মি. পুরু ইট বিছিয়ে দিতে হবে। এই সোলিং-এর ওপর ১:৩:৬ (সিমেন্টঃ বালুঃ খোয়া) অনুপাতে ৫ সে. মি. পরু ঢালাই দিতে হবে। ঢালাই এর ওপর ২১০ সে. মি. ব্যাস (ভিতরে রেখে গোলাকৃতি ১২.৫ সে. মি. ইটের দেয়ালের গাঁথুনি করতে হবে। দেয়ালের উচ্চতা যখন ২৫ সে. মি. হবে
মনে করি,
প্রস্তাবিত ডাইজেস্টারের কেন্দ্র হতে ইনলেট চেম্বারের কেন্দ্র পর্যন্ত দূরত্ব- x
এবং হাইড্রোলিক চেম্বারের কেন্দ্র পর্যন্ত দূরত্ব- y
ডাইজেস্টারে ব্যাস- D
হাইড্রোলিক চেম্বারের ব্যাস- D2
ভূতল হতে ডাইজেস্টারের টপ ডোমের গভীরতা- ০.৩০ m
ডাইজেস্টারের উপরের ডোমের উচ্চতা- f1
ডাইজেস্টারের দেয়ালের উচ্চতা- H
ডাইজেস্টারের নীচের ডোমের উচ্চতা- f2
ডাইজেস্টারের দেয়ালের পুরুত্ব- T
উপরের ডোমের পুরুত্ব- T1
তলার ডোমের পুরুত্ব- T2
ইনলেট চেম্বারের দেয়ালের পুরুত্ব- T4
হাইড্রোলিক চেম্বারের দেয়ালের পুরুত্ব- T3
ইনলেট চেম্বারের কেন্দ্র- C2
ডাইজেস্টারের কেন্দ্র- C
হাইড্রোলিক চেম্বারের কেন্দ্র- C1
ওপরের ডোমের বক্রাকার বাঁকের ব্যাসার্ধ- R1
নীচের ডোমের বক্রাকার বাঁকের ব্যাসার্ধ- R2
তখন কুয়ার একদিকে হাইড্রলিক চেম্বারের মুখের জন্য ১৫০ সে. মি.× ৭৫ সে. মি. এবং অন্যদিকে ইনলেট পাইপ বসানোর জন্য ২০×২৫ সে. মি. গাঁথুনি খোলা রাখতে হবে। ১৫ সে. মি. ব্যাসবিশিষ্ট একটি আরসিসি পাইপ (ইনলেট পাইপ) দেয়ালের সঙ্গে আনুমানিক ৩০ ডিগ্রি কোণ রেখে বসিয়ে নিতে হবে।
দেয়ালের কাজ মোট ১০০ সে. মি. হলে হাইড্রলিক চেম্বারের দরজার কাজ শেষ হবে। দেয়ালেরকাজ পুনরায় শুরু করে হাইড্রলিক চেম্বারের মুখের উপরিভাগ থেকে ৪০ সে. মি. পর্যন্ত গেঁথে নিতে হবে। এখন দেয়ালের উপরিভাগে ১:২:৪ অনুপাতে ৭.৫ সে. মি.পুরু ঢালাই দিতে হবে। এই ঢালাই-এর ওপর ৭.৫ সে. মি. পুরু ইটের গাঁথুনি দিয়ে ৬০ সে. মি. আর্চ উচ্চতাবিশিষ্ট গম্বুজ আকৃতির ডোম তৈরী করতে হবে।
ডেমের উপরের অংশে গ্যাস নির্গমনের জন্য একটি ১.২৭ সে. মি. ব্যাসবিশিষ্ট ২৫ সে. মি. লম্বা জিআই পাইপ খাড়াভাবে স্থাপন করতে হবে। জিআই পাইপের উপরি অংশে একটি গ্যাস ভাল সংযুক্ত করতে হবে। এখন দেয়ালের ভিতরের অংশে নিচ থেকে হাইড্রলিক চেম্বারের মুখের উপরিভাগ পর্যন্ত ১:৪ অনুপাত ১.২৭ সে. মি. পুরু প্লাস্টার করতে হবে। হাইড্রলিক চেম্বারের মুখের উপরি ভাগ তেকে ডোমের ভেতরের সম্পূর্ণ অংশ ১:৩, ১:২, ১:১ অনুপাতে তিনবার প্লাস্টার করতে হবে।
প্রতিবার প্লাস্টারিং-এর পূর্বে সিমেন্ট পেস্ট করে ব্রাশ করে নিতে হবে। ৫/৬ কিউরিং করার পর ভেতরের ডোমসহ আউটলেটের মুখ পর্যন্ত দেয়ালের শুকনা অবস্থায় ১ মি. মি. পুরু মোম/সিলিকেট প্রলেপ দিতে হবে। ডোমের ওপরের সম্পূর্ণ অংশ প্লাস্টার করে নিতে হবে।
হাইড্রোলিক চেম্বার
৭.৫ সে. মি. ইটের গাঁথুনি দিয়ে ২ স্তরবিশিষ্ট একটি আয়তাকার হাইড্রলিক চেম্বার তৈরী করতে হবে। নিচু ও ওপর চেম্বারের মাপ হবে যথাক্রমে ১০০ সে. মি. দৈর্ঘ্য × ১৫০ সে. মি. প্রস্থ × ১১৫ সে. মি. উচ্চতা এবং ১৬০ সে. মি. দৈর্ঘ্য × ১৫০ সে. মি. প্রস্থ × ৬০ সে. মি. উচ্চতা। ৬০ সে. মি. দেয়ালের শেষ হলে স্পেন্ট স্লারি নির্গমনের জন্য একটা খোলা পথ/দরজা রাখতে হবে হাড্রলিক চেম্বারের ভিতরে দিক ১:৪ অনুপাতে প্লাস্টার কাজ শেষ করে নিতে হবে। স্পেন্ট স্লারী নির্গমনের পথের ওপরে আরও ৭.৫ সে. মি. গেঁথে নিতে হবে। হাইড্রলিক চেম্বারের ওপরের অংশ ঢেকে রাখার জন্য প্রয়োজনবোধে স্লাব ব্যবহার করতে হবে।
ইনলেট ট্যাঙ্ক
ইনলেট পাইপের মুখে ৬০ সে. মি. × ৬০ সে. মি. মাপে একটি ১২.৫ পুরু ইটের ট্যাঙ্ক তৈরী করতে হবে। এই ট্যাঙ্ক ভেতরের অংশ ভালোভাবে প্লাস্টার করতে হবে। ডাইজেস্টার হাইড্রলিক চেম্বার এবং ইনলেট ট্যাঙ্ক তৈরীর পর প্লান্টের চারপাশে বালি ও মাটি দিয়ে এমনভাবে ভরাট করতে হবে যেন ডোমের উপরিভাগ পর্যন্ত মাটির নিচে থাকে।
প্লান্ট চালু করার নিয়মাবলী
প্লান্ট চালু করার সময় ১.৫/২ টন কাঁচামাল যথা গোবর, হাঁস-মুরগির মল, মানুষের মল জাতীয় পচনশীল পদার্থের প্রয়োজন। প্লান্ট তৈরির শুরু থেকে এগুলেপা জমা করে রাখলে প্লান্ট চালুর সময় এগুলো ব্যবহার করা যাবে। অবশ্য কেউ যদি ২/১ দিনেই উক্ত পরিমান কাঁচামাল যোগাড় করতে পারেন, তবে আগে থেকে জমা করে রাখার প্রয়োজন নেই। জমাকৃত কাঁচামাল এবং পরিষ্কার পানি গোবরের ক্ষেত্রে ১:১ হাঁস-মুরগির মলের ক্ষেত্রে ১:৩ অনুপাতে মিশিয়ে ইনলেট পাইপ দিয়ে আস্তে আস্তে কুয়ায় ঢালতে হবে। চার্জিং-এর সময় খেয়াল রাখতে হবে মাটির চাকা, পাথর, বালি, বড় সাইজের খড়কুটা ইত্যাদি যেন কুয়ার ভিতর প্রবেশ না করে। যদি প্লান্ট সম্পূর্ণ ভর্তি না হয়, বাকি অংশ পানি দিয়ে ভরে নিতে হেব।
প্লান্ট এবং গ্যাস বাল্বের ছিদ্র পরীক্ষা
গ্যাস বাল্বের ছিদ্র পরীক্ষার জন্য পলিথিন পাইপের গ্যাস বাল্বের মাথা পানির মধ্যে সামান্য ডুবিয়ে দিতে হবে। যদি বাল্ব বন্ধ অবস্থায় পানিতে বুদবুদ তৈরী হয়, তবে বুঝতে হবে বাল্বের ভিতর ছিদ্র আছে। বাল্বের গোড়ায় সাবানের ফেনা লাগিয়ে যদি বুদবুদ দেখা তবে ধরে নিতে হবে বাল্বের গোড়ায় গ্যাস লিক রয়েছে। এমতাবস্থায় গ্রিজ ও পাট জাতীয় কিছু দিয়ে ছিদ্র বন্ধ করতে হবে।
গ্যাস সরবরাহের নিয়ম
১.২৭/২.৫৪ সে. মি. চওড়া পিভিসি / জিআই পাইপ লাইন প্লান্ট থেকে চুলা, হ্যাজাক লাইট, জোনারেটর পর্যন্সংযোগ করতে হবে। যেহেতু বায়োগ্যাসে পানি মিশ্রিত থাকে, সেহেতু পানি জমে থাকার সম্ভবনা থাকবে না। পাইপের এক মাথা একটি প্লাস্টিক পাইপের সাহায্যে প্লান্টের সরবরাহ লাইনে এবং অন্য মাথাটি চুলা, হ্যাজাক, লাইট, জেনারেটর ইত্যাদির সাথে টি-এর সাহায্যে যুক্ত করে নিতে হবে।
৩ মিটার (১০৫) ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনক্ষম স্থিরডোম বায়োগ্যাস প্লান্ট নির্মাণের উপকরণ সমূহের পরিমাণ এবং মূল্য ১৯৯৪ সালের বাজর অনুসারে দেয়া হল। ১ হাজার ইট ২,৭০০ টাকা, ১২ বস্তা সিমেন্ট, ২,৭০০ টাকা, ১২০ ঘনফুট বালু ৫০০ টাকাক, আরসিসি পাইপ ১২ ফুট ১৫০ টাকা, রাজমিস্ত্রি ৮ জন ৮০০ টাকা, হেলপার ১২ জন ৬০০ টাকা, গ্রঅস বাল্ব (শর্ট পিসসহ) ১টি ১০০ টাকা, মোম ২ কেজি ১০০ টাকাক, বার্নার ১টি ৫০০ টাকাক, হ্যাজাক ১টি ৫০০ টাকা, পাইপ ২০০ টাকা, কুয়া খনন ৫০০ টাকা এবং অন্যান্য খরচ ২০০ টাকা মিলে মোট ৯,৫৫ টাকা আনুমানিক খরচ হবে। এ জাতীয় একটি গ্যাস প্লান্টের স্থায়িত্ব হবে অন্তত ৩০ বছর।
বর্তমানে বাংলাদেশে গরু-মহিষের সংখ্যা আনুমানিক ২ কোটি ২০ লাখ। এই গরু-মহিষ থেকে দৈনিক প্রাপ্ত গোবরের পরিমাণ ২২০ মিলিয়ন কেজি। প্রতি কেজি গোবর থেকে ১.৩ ঘনফুটগ্যাস হিসাবে বছরে ১০৯ ঘনমিটার গ্যঅস পাওয়া সম্ভব যা ১০৬ টন কেরোসিন বা কয়লার সমান। এ ছাড়াও হাঁস-মুরগি, ছাগল-ভেড়া ইত্যাদির মলমূত্র থেকে এবং আবর্জনা, কচুরপানা বা জলজ উদ্ভিদ থেকেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বায়োগ্যাস পাওয়া সম্ভব। শুধু তাই নয়, গ্যাসহিসাবে ব্যবহারের পর ঐ গোবর জমির জন্য উৎকৃষ্ট মানের জৈব সার হিসাবে ব্যবহার করা সম্ভব। তাই প্রতিটি পরিবারকে বায়োগ্যাস প্লান্টের সাথে যুক্ত করতে পারলে জ্বালানি সঙ্কট দূর করে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং উন্নত গ্রামীণ জীবনযাত্রা নিশ্চিত করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: শাইখ সিরাজ রচিত ‘মাটি ও মানুষের চাষবাস’ গ্রন্থ থেকে সংগ্রহীত
৭/৮ সদস্যবিশিষ্ট পরিবারের জন্য ১০৫ (৩ ঘনমিটার) ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনক্ষম স্থিরডোম বায়েঅগ্যাস প্লান্ট নির্মাণ পদ্ধতি
ডাইজেস্টার তৈরি পদ্বতি
২৫০ সে. মি. ব্যাস এবং ২২০ সে. মি. গভীর একটি গোলাকার কুয়া খননকরতে হবে। কুয়ার তলদেশ চাড়ির তলার আকৃতিতে খনন হবে যাতে হেব যাতে বাড়ির তলার মধ্যবিন্দু থেকে আর্চের উচ্চতা ৩০ সে. মি. (১ ফুট) হয় এর পর তলদেশে ভালো করে দুরমুজ করে নিতে হবে।
তলদেশে ৭.৫ সে. মি. পুরু ইট বিছিয়ে দিতে হবে। এই সোলিং-এর ওপর ১:৩:৬ (সিমেন্টঃ বালুঃ খোয়া) অনুপাতে ৫ সে. মি. পরু ঢালাই দিতে হবে। ঢালাই এর ওপর ২১০ সে. মি. ব্যাস (ভিতরে রেখে গোলাকৃতি ১২.৫ সে. মি. ইটের দেয়ালের গাঁথুনি করতে হবে। দেয়ালের উচ্চতা যখন ২৫ সে. মি. হবে
মনে করি,
প্রস্তাবিত ডাইজেস্টারের কেন্দ্র হতে ইনলেট চেম্বারের কেন্দ্র পর্যন্ত দূরত্ব- x
এবং হাইড্রোলিক চেম্বারের কেন্দ্র পর্যন্ত দূরত্ব- y
ডাইজেস্টারে ব্যাস- D
হাইড্রোলিক চেম্বারের ব্যাস- D2
ভূতল হতে ডাইজেস্টারের টপ ডোমের গভীরতা- ০.৩০ m
ডাইজেস্টারের উপরের ডোমের উচ্চতা- f1
ডাইজেস্টারের দেয়ালের উচ্চতা- H
ডাইজেস্টারের নীচের ডোমের উচ্চতা- f2
ডাইজেস্টারের দেয়ালের পুরুত্ব- T
উপরের ডোমের পুরুত্ব- T1
তলার ডোমের পুরুত্ব- T2
ইনলেট চেম্বারের দেয়ালের পুরুত্ব- T4
হাইড্রোলিক চেম্বারের দেয়ালের পুরুত্ব- T3
ইনলেট চেম্বারের কেন্দ্র- C2
ডাইজেস্টারের কেন্দ্র- C
হাইড্রোলিক চেম্বারের কেন্দ্র- C1
ওপরের ডোমের বক্রাকার বাঁকের ব্যাসার্ধ- R1
নীচের ডোমের বক্রাকার বাঁকের ব্যাসার্ধ- R2
তখন কুয়ার একদিকে হাইড্রলিক চেম্বারের মুখের জন্য ১৫০ সে. মি.× ৭৫ সে. মি. এবং অন্যদিকে ইনলেট পাইপ বসানোর জন্য ২০×২৫ সে. মি. গাঁথুনি খোলা রাখতে হবে। ১৫ সে. মি. ব্যাসবিশিষ্ট একটি আরসিসি পাইপ (ইনলেট পাইপ) দেয়ালের সঙ্গে আনুমানিক ৩০ ডিগ্রি কোণ রেখে বসিয়ে নিতে হবে।
দেয়ালের কাজ মোট ১০০ সে. মি. হলে হাইড্রলিক চেম্বারের দরজার কাজ শেষ হবে। দেয়ালেরকাজ পুনরায় শুরু করে হাইড্রলিক চেম্বারের মুখের উপরিভাগ থেকে ৪০ সে. মি. পর্যন্ত গেঁথে নিতে হবে। এখন দেয়ালের উপরিভাগে ১:২:৪ অনুপাতে ৭.৫ সে. মি.পুরু ঢালাই দিতে হবে। এই ঢালাই-এর ওপর ৭.৫ সে. মি. পুরু ইটের গাঁথুনি দিয়ে ৬০ সে. মি. আর্চ উচ্চতাবিশিষ্ট গম্বুজ আকৃতির ডোম তৈরী করতে হবে।
ডেমের উপরের অংশে গ্যাস নির্গমনের জন্য একটি ১.২৭ সে. মি. ব্যাসবিশিষ্ট ২৫ সে. মি. লম্বা জিআই পাইপ খাড়াভাবে স্থাপন করতে হবে। জিআই পাইপের উপরি অংশে একটি গ্যাস ভাল সংযুক্ত করতে হবে। এখন দেয়ালের ভিতরের অংশে নিচ থেকে হাইড্রলিক চেম্বারের মুখের উপরিভাগ পর্যন্ত ১:৪ অনুপাত ১.২৭ সে. মি. পুরু প্লাস্টার করতে হবে। হাইড্রলিক চেম্বারের মুখের উপরি ভাগ তেকে ডোমের ভেতরের সম্পূর্ণ অংশ ১:৩, ১:২, ১:১ অনুপাতে তিনবার প্লাস্টার করতে হবে।
প্রতিবার প্লাস্টারিং-এর পূর্বে সিমেন্ট পেস্ট করে ব্রাশ করে নিতে হবে। ৫/৬ কিউরিং করার পর ভেতরের ডোমসহ আউটলেটের মুখ পর্যন্ত দেয়ালের শুকনা অবস্থায় ১ মি. মি. পুরু মোম/সিলিকেট প্রলেপ দিতে হবে। ডোমের ওপরের সম্পূর্ণ অংশ প্লাস্টার করে নিতে হবে।
হাইড্রোলিক চেম্বার
৭.৫ সে. মি. ইটের গাঁথুনি দিয়ে ২ স্তরবিশিষ্ট একটি আয়তাকার হাইড্রলিক চেম্বার তৈরী করতে হবে। নিচু ও ওপর চেম্বারের মাপ হবে যথাক্রমে ১০০ সে. মি. দৈর্ঘ্য × ১৫০ সে. মি. প্রস্থ × ১১৫ সে. মি. উচ্চতা এবং ১৬০ সে. মি. দৈর্ঘ্য × ১৫০ সে. মি. প্রস্থ × ৬০ সে. মি. উচ্চতা। ৬০ সে. মি. দেয়ালের শেষ হলে স্পেন্ট স্লারি নির্গমনের জন্য একটা খোলা পথ/দরজা রাখতে হবে হাড্রলিক চেম্বারের ভিতরে দিক ১:৪ অনুপাতে প্লাস্টার কাজ শেষ করে নিতে হবে। স্পেন্ট স্লারী নির্গমনের পথের ওপরে আরও ৭.৫ সে. মি. গেঁথে নিতে হবে। হাইড্রলিক চেম্বারের ওপরের অংশ ঢেকে রাখার জন্য প্রয়োজনবোধে স্লাব ব্যবহার করতে হবে।
ইনলেট ট্যাঙ্ক
ইনলেট পাইপের মুখে ৬০ সে. মি. × ৬০ সে. মি. মাপে একটি ১২.৫ পুরু ইটের ট্যাঙ্ক তৈরী করতে হবে। এই ট্যাঙ্ক ভেতরের অংশ ভালোভাবে প্লাস্টার করতে হবে। ডাইজেস্টার হাইড্রলিক চেম্বার এবং ইনলেট ট্যাঙ্ক তৈরীর পর প্লান্টের চারপাশে বালি ও মাটি দিয়ে এমনভাবে ভরাট করতে হবে যেন ডোমের উপরিভাগ পর্যন্ত মাটির নিচে থাকে।
প্লান্ট চালু করার নিয়মাবলী
প্লান্ট চালু করার সময় ১.৫/২ টন কাঁচামাল যথা গোবর, হাঁস-মুরগির মল, মানুষের মল জাতীয় পচনশীল পদার্থের প্রয়োজন। প্লান্ট তৈরির শুরু থেকে এগুলেপা জমা করে রাখলে প্লান্ট চালুর সময় এগুলো ব্যবহার করা যাবে। অবশ্য কেউ যদি ২/১ দিনেই উক্ত পরিমান কাঁচামাল যোগাড় করতে পারেন, তবে আগে থেকে জমা করে রাখার প্রয়োজন নেই। জমাকৃত কাঁচামাল এবং পরিষ্কার পানি গোবরের ক্ষেত্রে ১:১ হাঁস-মুরগির মলের ক্ষেত্রে ১:৩ অনুপাতে মিশিয়ে ইনলেট পাইপ দিয়ে আস্তে আস্তে কুয়ায় ঢালতে হবে। চার্জিং-এর সময় খেয়াল রাখতে হবে মাটির চাকা, পাথর, বালি, বড় সাইজের খড়কুটা ইত্যাদি যেন কুয়ার ভিতর প্রবেশ না করে। যদি প্লান্ট সম্পূর্ণ ভর্তি না হয়, বাকি অংশ পানি দিয়ে ভরে নিতে হেব।
প্লান্ট এবং গ্যাস বাল্বের ছিদ্র পরীক্ষা
গ্যাস বাল্বের ছিদ্র পরীক্ষার জন্য পলিথিন পাইপের গ্যাস বাল্বের মাথা পানির মধ্যে সামান্য ডুবিয়ে দিতে হবে। যদি বাল্ব বন্ধ অবস্থায় পানিতে বুদবুদ তৈরী হয়, তবে বুঝতে হবে বাল্বের ভিতর ছিদ্র আছে। বাল্বের গোড়ায় সাবানের ফেনা লাগিয়ে যদি বুদবুদ দেখা তবে ধরে নিতে হবে বাল্বের গোড়ায় গ্যাস লিক রয়েছে। এমতাবস্থায় গ্রিজ ও পাট জাতীয় কিছু দিয়ে ছিদ্র বন্ধ করতে হবে।
গ্যাস সরবরাহের নিয়ম
১.২৭/২.৫৪ সে. মি. চওড়া পিভিসি / জিআই পাইপ লাইন প্লান্ট থেকে চুলা, হ্যাজাক লাইট, জোনারেটর পর্যন্সংযোগ করতে হবে। যেহেতু বায়োগ্যাসে পানি মিশ্রিত থাকে, সেহেতু পানি জমে থাকার সম্ভবনা থাকবে না। পাইপের এক মাথা একটি প্লাস্টিক পাইপের সাহায্যে প্লান্টের সরবরাহ লাইনে এবং অন্য মাথাটি চুলা, হ্যাজাক, লাইট, জেনারেটর ইত্যাদির সাথে টি-এর সাহায্যে যুক্ত করে নিতে হবে।
৩ মিটার (১০৫) ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনক্ষম স্থিরডোম বায়োগ্যাস প্লান্ট নির্মাণের উপকরণ সমূহের পরিমাণ এবং মূল্য ১৯৯৪ সালের বাজর অনুসারে দেয়া হল। ১ হাজার ইট ২,৭০০ টাকা, ১২ বস্তা সিমেন্ট, ২,৭০০ টাকা, ১২০ ঘনফুট বালু ৫০০ টাকাক, আরসিসি পাইপ ১২ ফুট ১৫০ টাকা, রাজমিস্ত্রি ৮ জন ৮০০ টাকা, হেলপার ১২ জন ৬০০ টাকা, গ্রঅস বাল্ব (শর্ট পিসসহ) ১টি ১০০ টাকা, মোম ২ কেজি ১০০ টাকাক, বার্নার ১টি ৫০০ টাকাক, হ্যাজাক ১টি ৫০০ টাকা, পাইপ ২০০ টাকা, কুয়া খনন ৫০০ টাকা এবং অন্যান্য খরচ ২০০ টাকা মিলে মোট ৯,৫৫ টাকা আনুমানিক খরচ হবে। এ জাতীয় একটি গ্যাস প্লান্টের স্থায়িত্ব হবে অন্তত ৩০ বছর।
বর্তমানে বাংলাদেশে গরু-মহিষের সংখ্যা আনুমানিক ২ কোটি ২০ লাখ। এই গরু-মহিষ থেকে দৈনিক প্রাপ্ত গোবরের পরিমাণ ২২০ মিলিয়ন কেজি। প্রতি কেজি গোবর থেকে ১.৩ ঘনফুটগ্যাস হিসাবে বছরে ১০৯ ঘনমিটার গ্যঅস পাওয়া সম্ভব যা ১০৬ টন কেরোসিন বা কয়লার সমান। এ ছাড়াও হাঁস-মুরগি, ছাগল-ভেড়া ইত্যাদির মলমূত্র থেকে এবং আবর্জনা, কচুরপানা বা জলজ উদ্ভিদ থেকেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বায়োগ্যাস পাওয়া সম্ভব। শুধু তাই নয়, গ্যাসহিসাবে ব্যবহারের পর ঐ গোবর জমির জন্য উৎকৃষ্ট মানের জৈব সার হিসাবে ব্যবহার করা সম্ভব। তাই প্রতিটি পরিবারকে বায়োগ্যাস প্লান্টের সাথে যুক্ত করতে পারলে জ্বালানি সঙ্কট দূর করে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং উন্নত গ্রামীণ জীবনযাত্রা নিশ্চিত করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: শাইখ সিরাজ রচিত ‘মাটি ও মানুষের চাষবাস’ গ্রন্থ থেকে সংগ্রহীত
No comments:
Post a Comment